ডেস্ক নিউজ: কোনো দল নির্বাচনে আসবে, আর কারা আসবে না, সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব ব্যাপার। এ বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জোর কোরে কোনো দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের নয় বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবনে বুধবার বিকেলে শেখ হাসিনার সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে না চাইলে, জনগণ আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা আসে নাই বরং নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। এতে প্রায় তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছে এবং ৫৮২টা স্কুল ও ৭০টা অফিস পুড়িয়েছে, গাছ কেটেছে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করেছে তারা। ২৭জন পুলিশকে হত্যা করেছে। এবার তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তারাই জানে। আর নির্বাচনে জেতাটা আমি জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তারা যদি মনে করে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখা উচিত তাহলে নৌকা মার্কায় ভোট দিবে, আমরা আবার ক্ষমতায় আসবো।’
এছাড়া বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাকে মুক্ত করতে হলে আইনগতভাবেই অগ্রসর হতে হবে বিএনপিকে। বিকেলে গণভবনে সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন তিনি। এ সময় গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় আবারো নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, কোনো দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসার দায়িত্ব সরকারের নয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামী তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনের শরণাপন্ন হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু, কোটা সংস্কার আন্দোলন, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।
গেলো মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে একেবারে মাসের শেষ অবধি বিদেশ সফরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে সৌদি আরব এরপর, যুক্তরাজ্য সবশেষ অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে এসব সফরের প্রাপ্তি ও তাৎপর্য নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।
বুধবার বিকেলে তার বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। শুরুতেই লিখিত বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেন সফরের বিস্তারিত।
এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক ধারা মন্তব্য করে তিনি বলেন রাজনৈতিকভাবে কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে নাকি নেবে না- সেটি সরকারের নয় বরং সেই দলের বিবেচ্য বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তারাই জানে। আর নির্বাচনে জেতাটা আমি জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তারা যদি মনে করে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখা উচিত তাহলে নৌকা মার্কায় ভোট দিবে, আমরা আবার ক্ষমতায় আসবো।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনের শরণাপন্ন হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী বিদেশের মাটিতে। অবশ্যই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে এধরণের অপরাধীকে বাংলাদেশে ধরে আনা। আন্তর্জাতিকভাবে যেভাবে করা হয় আমরা সেভাবে করবো।’
এ সময় পাহাড়ে বা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন- এই ইস্যুতে গোটা বিশ্বই বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সমর্থন ও সাহায্য করেছিলো বলে আমাদের খুব একটা চাপ পড়েনি। আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা এসে বলেছে তারা ফিরে যাক। এমনকি তারা ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতেও রাজি।’
সম্প্রতি রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পথচারীদেরও ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত। অনেক সময় চালকরা হেলপার দিয়ে গাড়ী চালান, ওটা বন্ধ করতে হবে। আর ড্রাইভারদের শাস্তি দিতে হবে, দেব। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা, যারা পথচারী তারা নিয়মটা মানে কিনা সেটাও দেখতে হবে। এই ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’
এছাড়াও সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন- তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।